প্রথম
ওয়ানডে শেষে রাতটা ক্রাইস্টচার্চেই ছিল বাংলাদেশ দল। গতকাল সকালে নেলসনে
পৌঁছেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। অনুশীলন না করলেও নেলসনের মাঠ ঘুরে এসেছে
বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। স্যাক্সটন ওভালের এই মাঠেই নিউজিল্যান্ডের
বিরুদ্ধে সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ।
ক্রাইস্টচার্চে
প্রথম ওয়ানডেতে ৭৭ রানে হেরে গিয়েছিল মাশরাফি বাহিনী। আগামীকাল সিরিজের
দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামবে দুদল। সিরিজে ফিরতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই
বাংলাদেশের সামনে। প্রায় সব বিভাগেই উন্নতি আনতে হবে টাইগারদের।
প্রথম
ম্যাচের পর কিউই ধারাভাষ্যকার সিমন ডুল বলেছিলেন, ব্যাটিংয়ে টপঅর্ডারে
বাংলাদেশের প্রয়োজন বড় ইনিংস। সঙ্গে ওপেনারদের শুধু বাউন্ডারি মারার
প্রবণতা বাদ দিয়ে স্ট্রাইক রোটেট করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। নিতে হবে
সিঙ্গেলস। কারণ প্রথম ম্যাচে ২৬৪ রান করলেও বাংলাদেশ ১৫৪ বল ডট খেলেছিল।
তিনি
আরও বলেছেন, বোলিংয়ে আনতে হবে বড়সড় উন্নতি। সুশৃঙ্খল হতে হবে। শর্ট অব
লেন্থ বোলিংটা করতে হবে আরও উপরে ফেলে, বোলিং করতে হবে আরও ফুল লেন্থে।
ফিল্ডিংয়েও অনেক যত্নবান হতে হবে।
প্রথম
ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে ওপেনার তামিম ইকবাল গতকাল বলেছেন, সিরিজ না হলেও
অন্তত একটি ম্যাচ জেতা সম্ভব বাংলাদেশের পক্ষে। নেলসনের টিম হোটেলে
মঙ্গলবার বিকেলের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে তামিমের ম্যাচ জেতার আত্মবিশ্বাস
নিয়ে বিডিনিউজ লিখেছে, ‘আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে জেতার। সিরিজ বলছি
না, অন্তত একটি ম্যাচ। আমি পরের ম্যাচের কথাই বলছি। সেটা জিতলে পরেরটা ভাবা
যাবে।’
মাঠের
পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে ম্যাচ জেতা খুব সম্ভব। তামিমের বক্তব্য
সম্পর্কে বিডিনিউজ লিখেছে, ‘মাঠে নেমে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঠিকমত করতে
পারলে (জিততে) না পারার কারণ নেই। এই দলের ওপর দারুণ বিশ্বাস আছে আমার।
আমরা অবশ্যই পারি।’
আপাতত
আগামীকালের দ্বিতীয় ম্যাচটা নিয়েই ভাবছে বাংলাদেশ দল। বাঁহাতি এই ওপেনার
বলেছেন, ‘আমরা যখন থেকে সাফল্য পেতে শুরু করেছি, তখন থেকেই আমরা প্রতিটি
ম্যাচ আলাদা করে দেখি। প্রতিটি ম্যাচ জিততে চাই। আমি জানি, সব ম্যাচ জেতা
সম্ভব নয়। সিরিজ জিতি বা না জিতি আমাদের চেষ্টা তা-ই থাকে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘পরের (দ্বিতীয় ওয়ানডে) ম্যাচটি একরকম সিরিজ নির্ধারক, চেষ্টা করব যেভাবে হোক আমরা যেন জিতি।’
তিনশো
রান তাড়া করে জেতার অন্যভাসও ক্রাইস্টচার্চে ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। তামিম
এমনটাই মনে করেন। ওয়ানডেতে তিনবার তিনশোর বেশি রান তাড়া করে জিতেছিল
বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে এই নেলসনেই স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রান তাড়া করে ৩২২
রান তুলে ম্যাচ জিতে মাশরাফিরা ১১ বল বাকি থাকতে। ২০১৩ সালে ফতুল্লায়
নিউজিল্যান্ডের ৩০৭ রান টপকে গিয়েছিল বাংলাদেশ চার বল আগে। ২০০৯ সালে
বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের ৩১২ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ ১৩ বল আগে।
ক্রাইস্টচার্চে
৩৪১ রানও টপকে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশ। তামিম বলছেন, ‘ওই লক্ষ্য
তাড়া করা যায়, বিশ্ব ক্রিকেটে তা হচ্ছেও। তবে আমাদের দলের কথা বললে, হাতে
গোণা দুই-তিনবারই আমরা কেবল তিনশর বেশি তাড়া করে জিতেছি।’
তবে
কিউইদের রানটা তিনশোর মধ্যে থাকলে জেতা সহজ হবে। তামিম বলেন, ‘ম্যাচ জেতা
যেমন অভ্যাসের ব্যাপার, তিনশ’ রানের বেশি তাড়া করতে শেখাও অভ্যাসের
ব্যাপার। আমরা যে কন্ডিশনে বেশি খেলি, বাংলাদেশে, সেখানে ৩৪০ রান হরহামেশা
হয় না। ২৬০-২৮০ রান বেশি হয়। এই কন্ডিশনে ভালো উইকেটে ৩২০-৩৩০ নিয়মিত হয়।
সেই অভ্যাস তো আমাদের নেই।’
এমন
বড় স্কোর তাড়া করার অভ্যাসটা হয়ে গেলেই জয় সম্ভব। সেই অভ্যাস সম্পর্কে
তামিম বলেছেন, ‘আমরা যদি দুই-একটি ম্যাচ জিতি বা কাছাকাছি যেতে পারি, তাহলে
আস্তে আস্তে অভ্যাস গড়ে উঠবে।’
No comments:
Post a Comment