এই মুহূর্তের সবচেয়ে
বড় ধামাকার নাম বিরাট কোহালি। এমনই তার ঝলসানি যে অশ্বিনের জাদুবিদ্যা, বিজয় নামের
পাহাড়, জয়ন্ত যাদবের চমককেও মনে থাকবে এক লহমার জন্য! যার আগে গোটা হৃদয় জুড়ে থাকবে
ওই অপার্থিব ডাবল সেঞ্চুরি। খুঁতহীন, চকমকে।
তবে এর বাইরেও কোহালির
ব্যাটিংয়ের একটা জিনিস আমাকে ভীষণ ভাবে টানে। মানুষের মন হল তার সর্বোচ্চ সীমানার প্রতিবিম্ব।
মনের মধ্যে সব সময় একটা সীমা টানা থাকে। যেটাকে টপকে যাওয়া সম্ভব নয়। যেমন স্রোতের
বিপক্ষে সাঁতার কাটা। বা, উল্টে যাওয়া গাড়িকে সোজা করার চেষ্টা। অথবা, একটা চিতাকে
দৌড়ে হারানো! আপনি জানেন যে, এ কাজ পারবেন না।
আর আমাদের লোকটা
কি না প্রথমে পূজারার ধাক্কা সামলাল, তার পর মিডল অর্ডারের কাঁপুনি আটকাল এবং এমন একটা
লিডের দিকে তাকাল যেটা কল্পনা করাও শক্ত ছিল। আসলে এ সব কর্মকাণ্ডই গড়পরতা সাধারণের
থেকে জিনিয়াসকে পৃথক করে এসেছে আদিঅনন্ত কাল থেকে। একটা টি-টোয়েন্টি সিরিজে চারটে সেঞ্চুরি
করার কথা কে ভাবতে পেরেছে? বা, ছয় মাসের মধ্যে তিনটে টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি? কোহালি এখন
এমন একটা পর্যায়ে চলে গিয়েছে যেখানে ওর কাছে ধারে কেউ নেই। যেটা একান্ত ওর।
ইংল্যান্ড দলের চেহারাটা
অনেকটা ভারদা এসে চেন্নাইয়ের যা দশা করেছে তার মতো! কুকের ক্যাপ্টেন্সির ভবিষ্যৎ খাদের
ধারে। স্পিনাররা পিছু হটেই চলেছে। ব্রডের সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যান্ডারসন শেষ
দু’টেস্টে উইকেটহীন। প্লেয়াররা মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। এই ইংল্যান্ড কি পাঁচশো রান করতে
পারে? বা বিপক্ষের কুড়িটা তুলতে পারে? শেষ টেস্ট শুরুর আগে এই দু’টো প্রশ্নই প্রধান।
উপমহাদেশে ডিফেন্সিভ টেকনিক না থাকলে কী হয়, মুম্বইয়ে সেটা ইংল্যান্ড বোলিংকে বুঝিয়ে
দিয়েছে কোহালি।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
হল, সিরিজটা ট্যাকটিক্যাল দিক দিয়ে কোহালির অধিনায়কত্বের মাইলফলক হয়ে থাকছে। যে নেতৃত্ব
জীবনটা অনেক সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। সিরিজের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের দখলদারি নিয়েছে
ভারত। এই ভারত হার না মানা মানসিকতার একটা দল। তার উপর অশ্বিন এ বার ঘরের মাঠে বল করবে।
No comments:
Post a Comment