‘আলোচিত-সমালোচিত’ নাসির

‘আলোচিত-সমালোচিত’ নাসির
গত কয়েক বছর হলো বিষয়টা নাসির হোসেনের সয়ে যাওয়ার কথা। মাঠের পারফরম্যান্স থাকুক আর নাই থাকুক নাসির আলোচনায় থাকেন। দলে থাকলে আলোচনা হয়, না থাকলে সমালোচনা হয়। বাদ পড়লে, কেন বাদ পড়লেন সেটা নিয়ে আলোচনা হয়। যদিও, নাসির অনেকদিন হলো তার নামের সাথে যায় এমন কোনো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
 
সেটা এতটাই যে, এই ক’দিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বসে কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে এই ডানহাতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বসলেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগেই তার মাথার ওপর আকাশ সমান চাপ ছিল।
 
বিপিএল শুরুর আগে সেই চাপটা আরো খানিকটা বেড়ে যায়। কারণ, তার কাঁধেই যে ওঠে নবীন দল সিলেট সিক্সার্সের নেতৃত্ব। এই আসরের আগে নাসির দু’টি ম্যাচে বিপিএলে অধিনায়কত্ব করেছিলেন। প্রথমটা ২০১৩ সালে রংপুর রাইডার্সের হয়ে, দ্বিতীয়টা ২০১৫ সালে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে বরিশাল বুলসের বিপক্ষে। কোনোটাই অবশ্য জিততে পারেননি।
 
তাই সিলেট সিক্সার্সের হয়ে তার অধিনায়ক হওয়াটা ব্যাটিং-বোলিংয়ে নিজেকে প্রমাণ করার সাথে সাথে অবশ্যই বাড়তি একটা চাপের ব্যাপার ছিল। যদিও, সব দায়িত্বই দারুণভাবে পালন করে যাচ্ছেন তিনি।
 
এই অধিনায়ক প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে চার ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। দল জিতে যায় নয় উইকেটের বড় ব্যবধানে।
 
দ্বিতীয় ম্যাচেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে চার ওভারে দেন মাত্র ১৮ রান। নেন একটি উইকেট। বলা যায়, মাইলফলকের ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখলেন নাসির। এই ম্যাচ দিয়েই বিপিএলের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৫০টি ম্যাচ খেললেন তিনি। সর্বোচ্চ ৫৩টি ম্যাচ খেলেন সাব্বির রহমান রুম্মান, আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ খেলেন ৫১টি ম্যাচ।
 
নাসির ৫০ ম্যাচে করেন ৯০২ রান। বল হাতে ২৬ উইকেট নেন তিনি। সাথে ২১টি ক্যাচও আছে। দারুণ একজন অলরাউন্ডারই বলা যায় তাকে! শেষ অবধি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বিপিএলের সাবেক চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে গতকাল চার উইকেটে হারায় সিলেট। ব্যাট হাতে ১৮ রান করেন নাসির। জয়ের অন্যতম নায়ক এই নাসির।
 
তবে, তাকে ঘিরে এত আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনাও কম নয়। কারণ নাসির ও ম্যানেজার হাসিবুল হোসেন শান্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নীতিমালার লেভেল ওয়ান ভঙ্গ করেছেন। বিসিবি তাদের মৌখিক সতর্কবার্তা দিয়েছে।
 
প্রথম ম্যাচে বিপক্ষ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাথে টস হতে বাড়তি ছয় মিনিট নেন নাসির। কারণ, টিম শিট তখনও প্রস্তুত ছিল না।
 
দুই অনফিল্ড আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল, রিয়াজ উদ্দিন, টেলিভিশন আম্পায়ার তানভির আহমেদ ও চতুর্থ আম্পায়ার আক্তারুজ্জামান সেটাই অভিযোগ করেন। বিষয়টা ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পালেরও নজর এড়ায়নি। যদিও, নাসির ও হাসিবুল দায় স্বীকার করে নেওয়ায় কোনো আনুষ্ঠানিক শুনানির দরকার হয়নি ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পালের।
 
নীতিমালার আর্টিকেল ২.১.১ অনুযায়ী নাসির ও হাসিবুলের নামের মাঠে একটি করে ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হলো। একজন চারটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে তিনি এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবেন।
 
তবে, এই মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা নয়, ভালো সময়টাই উপভোগ করতে চাইবেন নাসির!
 
ইত্তেফাক/

No comments:

Post a Comment

Recent Posts Widget