গভীর হতাশা নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন লিওনেল মেসি। মাত্র ২৯ বছরেই অবসর! হ্যাঁ। আজ বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে নিউ জার্সিতে কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরেছেন। চিলি টাইব্রেকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনাকে। এরপর অবসরের ঘোষণা দেন মেসি।
"আমার জন্য জাতীয় দলে খেলা শেষ। আমার যতটা করা সম্ভব ছিল করেছি। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারাটা নিদারুণ বেদনার-" জানিয়েছেন মেসি। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে যান মেসি। সেখানে জার্মানির কাছে হারেন। ২০১৫ কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছিলেন। সেখানে এই চিলির কাছেই টাইব্রেকে হেরেছিলেন। আবার হারলেন কোপার শতবর্ষ উদযাপনের বিশেষ আসরে। টানা তিনটি আসরের রানার্স আপ হওয়ার কষ্ট নিয়ে জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিলেন
আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডের মালিক মেসি। তিন আসরেই আর্জেন্টিনার অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
লিওনেল মেসি যেন বর ও শাপ একই সাথে পেয়েছেন! নইলে এমন বিচিত্র ব্যাপার ঘটে কেন তার সাথে বারবার! ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৫বার ব্যালন ডি'অর জিতেছেন। ক্লাব সাফল্যেও সবাইকে ছাড়িয়ে। নৈপুণ্যে অতুলনীয়। কিন্তু ফুটবলের লিজেন্ডরা বড় শিরোপা জিতেই প্রাতঃস্মরণীয়। আর মেসির হাত থেকে তিন বছরে তিনটি বড় শিরোপা ফসকে গেলো। একই চিত্র তিন ফাইনালে পর। ট্রফির পাশ দিয়ে হতাশায় ডুবে যাওয়া মেসি হেটে যাচ্ছেন। ওই শিরোপায় তার হাত রাখার অধিকার নেই!
বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালেও সেই একই চিত্র! নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামের ৮২ হাজার দর্শক দেখলো এক ভেঙে পড়া মেসিকে। চিলির কাছে গত বছরের মতো এবারও কোপা আমেরিকার ফাইনালে টাইব্রেকে হারতে হলে আর্জেন্টিনাকে। এবার মেসির কষ্ট আরো বেশি। কারণ, টাইব্রেকে দলের প্রথম শটটি ছিল তার। এবং তিনি বাইরে মেরেছেন। তার মিসে দলের অন্যদের আত্মবিশ্বাস নড়বড়ে হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এরপর মেসির বার্সেলোনা সতীর্থ ক্লদিও ব্রাভো রুখে দেন বিগলিয়ার শট। চিলির উৎসবের রাতে আবার মেসির হতাশার অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার রাত এটি।
২০১৪ বিশ্বকাপ। ব্রাজিল থেকে শিরোপা তুলে আনার সুযোগ মেসিদের সামনে। আসরে ৪টি গোল করলেন মেসি। এই ক্ষুদে যাদুকরের ছোঁয়ায় দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিযন আর্জেন্টিনা আরেকটি শিরোপার সাথে স্পর্শের দুরত্বে। সেই দুরত্ব আর ঘুচলো না। জার্মানির কাছে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হেরে রানার্স আপ মেসিরা।
২০১৫ কোপা আমেরিকা। এবারও ফাইনালে উঠতে সমস্যা হলো না ১৪বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু ফাইনালে গোল করতে না পারার ব্যর্থতার মধ্যে পড়লো আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকে গেলো গোলশূণ্য খেলা। মেসিরা পরাজিত। আবার হতাশার প্রতিমূর্তী মেসি।
এবার যুক্তরাষ্ট্রে কোপার শতবর্ষ উদযাপনের বিশেষ কোপার আসর। আর্জেন্টিনার ২৩ বছরের কোপা শিরোপা জিততে না পারার দুঃখ মোচনের আসর। কিন্তু কোথায় কি! ফাইনাল মানেই যে মেসি ও তার দলের ব্যর্থতা বুঝতে হবে তো!
কারণ, মেসি বর পেয়েছেন "ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হবে"। সেই সাথে শাপও জুটেছে "কখনোই দেশের হয়ে বড় আসরের মুকুট জিতবে না"। মেসি আবারও তাই ট্র্যাজিক হিরো!