বছরের
শেষ দিনটাই তার সামনে এনে দিয়েছিল দারুণ এক সুযোগ। কিন্তু সুযোগটা মুঠোয়
পুরতে পারলেন না জলাতান ইব্রাহিমোভিচ। লিওনেল মেসিকে ছাড়িয়ে যেতে দরকার ছিল
জোড়া গোল। একটা গোল করলেও ছুঁতে পারতেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২ গোল
পেয়েছিলও। যদিও একটি মার্শিয়ালের, অন্যটি পগবার। মিডলসবরোর বিপক্ষে ২-১
গোলের জয়ে তাই ব্যক্তিগত আনন্দের উপলক্ষ পেলেন না ইব্রা।
মেসিকে
ছাপিয়ে যাওয়া মানে হতো সবাইকেই ছাপিয়ে যাওয়া। ২০১৬ সালের বর্ষসেরা
খেলোয়াড়ের প্রায় সব পুরস্কার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দখলে গেলেও এই বছরটা
গোল করে ও করিয়ে সবচেয়ে ভালো যে কেটেছে মেসিরই। ইউরোপের শীর্ষ ৫ লিগে খেলা
ফুটবলারদের মধ্যে ৫১ গোল করে মেসিই সবার উপরে।
ফুটবল
মৌসুমভিত্তিক খেলা। এক বছরের মাঝামাঝিতে শুরু হয়ে আরেক বছরের মাঝামাঝিতে
শেষ হয়। এ কারণে এক বর্ষপঞ্জির হিসাব সেভাবে চোখে পড়ে না। তবে গত শনিবার
একটা বছর যেহেতু শেষই হয়ে গেল, অনেকেরই আগ্রহ থাকে বছরের হালখাতায় চোখ
বোলানোর।
ইউরোপের
পাঁচ শীর্ষ লিগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, জার্মান
বুন্দেসলিগা, ইতালীয় সিরি ‘আ’ ও ফরাসি লিগ ওয়ানের ক্লাবগুলো হয়ে খেলা
খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল মেসির। দ্বিতীয় স্থানে আছেন ইব্রাহিমোভিচ
৫০ গোল করে। তিনি অবশ্য এই ৫০ গোলের বেশির ভাগই করেছেন প্যারিস সেন্ট
জার্মেইয়ের (পিএসজি) হয়ে। বছরের মাঝখানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে এসেও ইব্রা
গোল করে চলেছেন। ৩৪ বছর বয়সেও গোলের ফিফটি করা দুর্দান্ততো বটেই।
রোনালদো
২০১৬ সালটিকে তার ক্যারিয়ারের সেরা বছর বলছেন। এ বছর চ্যাম্পিয়নস লিগ
জেতার পাশাপাশি পর্তুগালের হয়ে ইউরোও জিতেছেন। কিন্তু মোট গোলে মেসির চেয়ে
বেশ পেছনেই আছেন রোনালদো। তার গোলসংখ্যা ৪২। জার্মান লিগের সেরা গোলদাতা
বায়ার্ন তারকা রবার্ট লেভানডফস্কি আছেন আরও পেছনে, তার গোল ৩৯।
মেসির বার্সা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ নিজেকে কিছুটা দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। ৪৮ গোল করেই বছরের দৌড়টা থামিয়ে দিতে হয়েছে তাকে।
২০
ডিসেম্বরের পর বড়দিন আর নববর্ষের লম্বা ছুটি চলছে লা লিগায়। সুয়ারেজ বলতেই
পারেন, এই সময় ইব্রাহিমোভিচের মতো খেলার সুযোগ পেলে (ইংলিশ ফুটবলে বড়দিন ও
নববর্ষের ছুটি নেই) তিনি হয়তো মেসিকে ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন। তবে এটা ঠিক এই
সুয়ারেজ যে ম্যাচগুলো খেলতেন, সেগুলোতে তো মেসিও খেলতেন! খেলা হলে
সুয়ারেজের যেমন সম্ভাবনা থাকত, ঠিক তেমনি মেসিরও সুযোগ থাকত নিজের
গোলসংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার।
মেসি
এবারও ধরে রেখেছেন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব। ২০১৬ সালে ‘সেই মেসি’কে দেখার আনন্দ
ফিরে এসেছে। সেই ড্রিবলিংয়ের জাদু। কিন্তু বছর শেষের চওড়া হাসি হাসবেন
রোনালদোই। মেসি আরও একবার কোপা আমেরিকার ফাইনাল থেকে কেঁদে ফিরেছেন। সেই
দুঃস্মৃতিও ফিরে আসবে। আর রোনালদো বছরটা শেষই করেছেন ক্লাব বিশ্বকাপের
ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে! সূত্র: ইএসপিএন।
২০১৬ সালের সর্বোচ্চ ৫ গোলদাতা
১. লিওনেল মেসি, বার্সেলোনা ৫১
২. জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, পিএসজি/ইউনাইটেড ৫০
৩. লুইস সুয়ারেজ, বার্সেলোনা ৪৮
৪. ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, রিয়াল মাদ্রিদ ৪২
৫. রবার্ট লেভানডফস্কি, বায়ার্ন মিউনিখ ৩৯
* শুধু ক্লাবের হয়ে গোল, জাতীয় দলের গোল ধরা হয়নি
No comments:
Post a Comment