গতি
তারকা কাকে বলে, তা এই সময়ের ক্রিকেট দর্শকদের ভুলে যাওয়ার কথা। লিলি-থমসন,
মার্শাল-গার্নারদের যুগ বাদ দিন। এই যে শোয়েব আখতার কিংবা ব্রেট লির মতো
গতি তারকাও তো এখন দুনিয়ায় নেই। নিজে ছিলেন গতি তারকা, জুটি বেঁধে বল করতেন
আরেক স্পিডস্টার কার্টলি অ্যামব্রোসের সাথে। এই সময়ে এসে সেই কোর্টনি
ওয়ালশ দেখছেন গতির শূন্যতা।
কাজ
করছেন এখন বাংলাদেশ দলের সাথে। তারপরও হতাশ নন ওয়ালশ। বলছেন, তার দল থেকেই
বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা আছে ভবিষ্যতের এক গতি তারকার— তাসকিন আহমেদ।
উইজডেন
ইন্ডিয়াকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাত্কারে গতি তারকাদের হারিয়ে যাওয়া এবং নিজের
বাংলাদেশের জীবন নিয়ে কথা বলছিলেন বাংলাদেশের বোলিং কোচ ওয়ালশ। সেখানেই
বললেন তাসকিন সম্পর্কে। ওয়ালশ বলছিলেন, গতি তারকা খুঁজে পাওয়া মুখের কথা
নয়, ‘এটা কঠিন ব্যাপার। এটা ছোটখাটো একটা কাজ নয়। তবে আমার ধারণা, আমাদের
ছেলেদের কারো কারো এই যোগ্যতা আছে। তাসকিন সেরকম একটা ছেলে যার এটা
(স্পিডস্টার) হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে এবং যোগ্যতাও আছে। ওর সাথে আমার কাজটা
কেবল চলছে বলা যায়। এখন আমাদের দেখতে হবে যে, কিভাবে ওকে এবং ওর স্কিল আরো
ভালো করা যায়।’
প্রশ্ন
ছিল, এখানে তিনি ওয়ালশ-অ্যাম্বোস জুটির মতো কিছু দেখতে পাচ্ছেন কি না।
আবারও আশাবাদী এই ক্যারিবিয় কিংবদন্তী বলছিলেন, ‘তাসকিন আর মেহেদী আছে।
সফিউল আর রুবেল আছে। ক্যাপ্টেন অবশ্য টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছে। কিন্তু
এখনও অসাধারণ বোলার। আর তরুণ মুস্তাফিজ তো আছেই। যদি শেষ পর্যন্ত
মুস্তাফিজ আর তাসকিন দশ বছর জুটি করে খেলতে পারে এবং মেহেদী ওদের সাথে যোগ
দেয়; একটা গ্রেট কম্বিনেশন হতে পারে বলে মনে হয়। ওরা জানে, ওদেরকে কি করতে
হবে।’
বাংলাদেশ
দলের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ওয়ালশ বলছিলেন, ‘কখনো কঠিন
হই, কখনো রসিকতা করি, কখনো আবার স্রেফ রিল্যাক্স থাকি। আমি চেষ্টা করি কোনো
কিছু নিয়ে উত্তেজিত না হতে। কারণ আমার মনে হয়, এটাই কারো ভেতর থেকে তার
সেরাটা বের করে আসার শ্রেষ্ঠ উপায়। তবে তাদের যা করা উচিত ছিল, তা যদি করতে
না থাকে, আমার কাজ হয় তাদের ব্যাপারটা জানানো। আমি সবসময় এগিয়ে গিয়ে কথা
বলি এবং ওদের সাথে খুব খোলামেলা।’
ওয়ালশের
ভাষ্য, তিনি আসলে নতুন কিছু করছেন না। কেবল মশালটা জালিয়ে রেখেছেন, ‘হিথ
স্ট্রিক অসাধারণ কাজ করেছে। আমি আসলে কেবল ওর ট্রেন্ডটা ধরে রাখার চেষ্টা
করেছি। আমি চেষ্টা করি ওরা যাতে নিজেদের সেরাটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দিতে
পারে, সে জন্য ওদের সহায়তা করতে। কারণ দিনশেষে আমরা সবাই জিততে চাই। পুরো
কোচিং স্টাফই এই ব্যাপারে একতাবদ্ধ থাকে এবং আমি যদি সেখানে নিজের কাজটা
করতে পারি, তাতেই খুশি।’ আর বাংলাদেশে কাজ করার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল
ভাষা, সেটাই বললেন এই কোচ, ‘আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এখান সংস্কৃতিটা
বোঝা। এটা নিশ্চিত করা দরকার ছিল যে, আমি যা বলছি, তা ওরা বুঝতে পারছে।
ভাষার দেয়ালটাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আমি এটার সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছি এবং
ওরা আমাকে খুব সহায়তা করেছে। এটা খুব ভালো একটা ব্যাপার ছিল যে, দলে
কয়েকজনকে পেয়েছি যারা বাকীদের কথা আমাকে অনুবাদ করে দিতে পারে এবং ওদেরকে
আমার কথাবার্তাটা জানাতে পারে।’
No comments:
Post a Comment