২৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মাস্টার ব্লাষ্টার শচীন টেন্ডুলকার খুব বেশি বিতর্কে জড়াননি। এমনকি তাকে নিয়ে সমালোচনার জবাব তিনি মুখের পরিবর্তে ব্যাট দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এরকম ঘটনাও রয়েছে যে, শচীনকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আম্পায়াররা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন এমন সময় নিজেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা শুরু করেছেন তিনি।
ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার শচীন সবসময়ই চাইতেন বিতর্ক থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে। কিন্তু তিনি বিতর্ক থেকে দুরে থাকলেও বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি। সম্প্রতি মৌসুরিতে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিতর্কে নাম জড়িয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ শচীন টেন্ডুলকারের।
এবার দেখে নেওয়া যাক দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কোন কোন বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল টেস্ট-
ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের মালিকের। স্যার ডন ব্রাডম্যানের ২৯ সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর বিতর্কে জড়ান শচীন। ডনের রেকর্ড ছোঁয়ার জন্য সে সময় ফিয়েট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারত রত্নকে একটি ফেরারি গাড়ী উপহার দেয়। সে সময় ভারতের অর্থমন্ত্রী শচীনের গাড়ীর কর মওকুফ করে দিয়েছিলেন। এরপর দিল্লি হাইকোর্টে শচীনের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলা দায়ের হয়। পরে ফিয়াট ইন্ডিয়া কোম্পানি গাড়ীর পুরো কর পরিশোধ করে দেয়।
মুম্বাইয়ে নতুন বাড়ী নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন শচীন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বিএমসির প্রয়োজনীয়
অনুমতি ছিল না। বিএমসির তরফ থেকে শচীনের বিরুদ্ধে ৪.৭৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শচীনের বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ আনেন ম্যাচ রেফারি মাইক ডেনেস। এ জন্য তাকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। পরে শচীন তার আত্মজীবনী ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’তে জানান, শুধুমাত্র বলের সিমে লেগে থাকা ঘাস আঙুল দিয়ে তুলেছিলেন।
একবার এক সাক্ষাৎকারে শচীন বলেছিলেন,‘ আমি মারাঠি হিসেবে গর্ববোধ করি। তবে আগে আমি ভারতীয়। আর মহারাষ্ট্র ভারতের অন্তর্ভুক্ত।’ তার এই কথার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তৎকালীন শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরে। ক্রিকেট মাঠে সবচেয়ে বড় বিতর্কের একটি ছিল মাঙ্কিগেট বিতর্ক। ২০০৮ সালে সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্টে হরভজন সিং অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে বাঁদর বলে গালি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় শচীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। কারণ ওই ঘটনার সময় সবচেয়ে কাছে ছিলেন শচীনই। পরে মাইকেল ক্লার্ক অভিযোগ করেছিলেন, এই ঘটনায় শচীন সবচেয়ে কাছে থেকেও নীরব ছিলেন।
২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের সময় জ্যামাইকায় ভারতীয় দূতাবাস গোটা ভারতীয় দলকে আমন্ত্রণ জানায়। সেখানে ভারতের জাতীয় পতাকার তিন রংয়ের কেক কাটেন শচীন। এ নিয়ে ভারতজুড়ে তুমুল বিতর্ক হয়। ইন্দোরের একটি আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়।
শচীনের লাগেজ ভুল জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়ায় তার পুরো নাম জিজ্ঞেস করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। এতেই বিপত্তি ঘটে। টুইটারে শচীন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এরপর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে শচীনপ্রেমীরা তীব্র ভাষায় আক্রমণ শুরু করে। শেষমেষ ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ শচীনের কাছে ক্ষমা চান। শুধুমাত্র নাম জিজ্ঞাসার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করায় শচীনেরও সমালোচনা হয়।
সবশেষ মুসৌরিতে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিতর্কে নাম জড়ালো শচীনের। তার বন্ধু মুসৌরির একটি নির্মাণ কাজে ঝামেলা বাধে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে। এ ব্যাপারে শচীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাহায্য চেয়েছিলেন বলে খবর বেরোয়। শচীনের মুখপাত্র এ কথা স্বীকার করলেও তার আর্থিক স্বার্থ নেই বলে জানিয়েছেন।
News Collect From: banglamail24