ক্রিকইনফোর সাময়িকীর প্রচ্ছদে বাংলাদেশ

প্রতিমাসেই ‘ক্রিকেট মান্থলি’ নামে একটি ক্রিকেট বিষয়ক ম্যাগাজিন বের করে ক্রিকেটের জনপ্রিয় ‍ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফো। সেপ্টেম্বরে তাদের প্রচ্ছদে ঠাঁই পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের গল্প। ‘রেড সান রাইজিং’ নামের এই প্রচ্ছদটি লিখেছেন সিদ্ধার্ত মোঙ্গা ও মোহাম্মদ ইসাম।
 
লেখাটিতে উঠে আসে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানের গল্প। বলা হয়, অসংখ্যা হারের বঞ্চনা ও আশার মরিচীকার পর এবার সত্যিই বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ, দেখছে নতুন শুরু।
 
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জয়ের অভ্যাস শুরু হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আগে বাংলাদেশকে একটা জয়ের জন্য অনেক অপেক্ষা করতে হতো। এখন সেটা নেই। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও পরাজয় বরণ করেছে। কিন্তু এখন যেন একটু একটু করে সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসছে বাংলাদেশ।
 
তামিম ইকবাল বলেন, আপনার যদি জয়ের অভ্যাস না থাকে আপনি জানবেনই না কিভাবে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়।
 
আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জয়ের জন্য খেলোয়াড়দের পরিবর্তন করতে থাকতো। টানা ৪৭ ম্যাচ হারের সময় ৩৯ জন ক্রিকেটারকে খেলায় বাংলাদেশ।
 
এছাড়া উঠে আসে বাংলাদেশ ক্রিকেটে পরিবর্তনের গল্প। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ অংশগ্রহণের আগে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও এতটা জনপ্রিয়তা ছিলোনা। ছিলনা পেশাদারিত্ব সেসময় স্কুল থেকে শুরু করে ক্লাব ক্রিকেটেও ৩৫ ওভারের ম্যাচ হত।
 
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচের স্মৃতিও তুলে ধরেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে ভালই লড়াই করে বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ দিন শেষে যেন সবাই ভুলে যায় আরো ১৮০ ওভার খেলতে হবে।
 
বুলবুল বলেন, টেস্ট খেলার ব্যাপারে শুধু আমাদের অভিজ্ঞতার অভাব ছিলনা, সবার্ই ঘাটতি ছিল। আমাদের ড্রেসিংরুম যেন বাজার হয়ে গিয়েছিলো।  মন্ত্রী আসছিলেন, বিসিবি সভাপতি আসছিলেন, সাবেক কোচরা আসছিলেন, অন্যান্য অতিথিরা আসছিলেন। আমাদের ফোকাসই চলে যায় তখন।
 
তখন ভাবা হয়েছিল বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেয়া বোধহয় আইসিসির ভুল। এরপর অনেকদিন বাংলাদেশ জয়বঞ্চিত থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের দর্শক হতাশ হয়না। আশায় বুক বাধে।
ওপেনার তামিম ইকবাল বলেন, টানা ৪০টি ম্যাচ হারার পরও স্টেডিয়াম পূর্ণ থাকে। এমন দৃশ্য আপনি সব জায়গায় দেখবেন না।
 
আমিনুল ইসলাম বুলবুল এখন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রিকেটে ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল।
 
নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি যখন ওমান বা চীনে ছেলেদের জিজ্ঞাসা করি কে ক্রিকেট খেলতে চাও, তখন ১০০ জনের মধ্যে ৫জন রাজি হবে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ১০০ জনের মধ্যে ৯৯ জন্ ক্রিকেট খেলতে চাইবে। এই উন্মাদনা এই ভালোবাসাই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
 
এই ক্রিকেট উন্মাদনা বাংলাদেশ তৈরির আগে থেকেই। পূর্ব পাকিস্তান থাকা অবস্থাতেই বাংলাদেশিরা ক্রিকেট খেলতো। পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলতে পারা একমাত্র বাংলাদেশি রকিবুল হাসানের কথাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
 
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব ঘটনা, হতাশা ও উত্থানের অনেক কথা উঠে এসেছে ক্রিকেট মান্থলির প্রতিবেদনে।
 
ইত্তেফাক
Recent Posts Widget