ফিটনেস দিয়ে মুগ্ধ করলেন আশরাফুল

মূল মাঠের সাথে তুলনা করলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের অ্যাকাডেমি মাঠটাকে ছোট বলাই উচিত। কিন্তু দৌড় শুরু করলে বোঝা যায়, ছোট মানে একেবারে ‘ছোট্ট’ নয়।
 
সেই মাঠটাই একনাগাড়ে গুনে গুনে আট চক্কর দিতে হয় ফিটনেস পরীক্ষায়। যে পরীক্ষাটা প্রায় সাড়ে তিন বছর পর মঙ্গলবার আবার দিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এই লম্বা বিরতিতে ফিটনেসে মরিচা ধরে যাওয়ার ভয় ছিল। ভয় ছিল যে, আশরাফুল নিজেকে খুঁজে পাবেন না। কিন্তু পরীক্ষা শেষে খোদ ট্রেনার কোরে বকিং বললেন, চলমান অনেক ক্রিকেটারের চেয়ে ভালো টাইমিংয়ে দৌড় শেষ করেছেন আশরাফুল।
 
অস্ট্রেলিয়ান এই ট্রেনার জানিয়েছেন খেলার মধ্যে থাকা অনেক ক্রিকেটারের চেয়েও ভালো ফিটনেস আছে আশরাফুলের। অ্যাকাডেমি মাঠ আট চক্কর দিলেন আশরাফুল। যা দুই কিলোমিটারের সমান। সময় নিয়েছেন নয় মিনিট। এটা দেখে বকিং জানান ভালো অবস্থাতেই আছেন আশরাফুল। কারণ আটবার চক্কর দিতে সবচেয়ে কম সময় নেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজের সময় লাগে ছয় মিনিট। আশরাফুলের ফিটনেসের বিষয়ে বকিং বলছিলেন, 'সাড়ে তিন বছর পরও যে এমন ফিটনেস পরীক্ষা দিতে পেরেছে এটা অনেক ভালো একটা ব্যাপার। খেলার মধ্যে থাকা অনেক ক্রিকেটারের চেয়ে সে ভালো অবস্থায় আছে। এভাবে করতে পারলে ফিটনেসের দিক থেকে ও খুব দ্রুত ভালো একটা অবস্থায় চলে আসবে। সব মিলিয়ে ও ভালো অবস্থাতেই আছে।'
 
আশরাফুল বললেন, এই সাড়ে তিন বছর অনুশীলনের সুবিধা না পাওয়ায় নিজেকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে এই ফিটনেস ধরে রাখার জন্য, 'আসলে শেষ সাড়ে তিন বছর খেলার বাইরে ছিলাম। বিসিবির তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। তো শেষ দুই সপ্তাহ ধরে বিসিবির তত্ত্বাবধানে ট্রেনিং করছি। প্রতিদিন আসছি। আজকে সুযোগ হলো তো একটা পরীক্ষা দিলাম। তো আল্লাহর রহমতে ভালোই আছে। শেষ তিন বছর আমি যেখানে সুযোগ পেয়েছি ক্রিকেট খেলেছি। আমেরিকাতে খেলেছি, ঢাকাতে যেখানে সুযোগ পেয়েছি খেলেছি। এতোদিন একা একা অনুশীলন করেছি। ১৩ বছর জাতীয় দলের সুবিধা পেয়েছি। এখন আবার পাচ্ছি। আমার কাছে মনেহয় আমি ভালো অবস্থাতেই আছি।'
 
এখন এই ফিটনেস পরীক্ষার পর স্বাভাবিকভাবেই আশরাফুলের লক্ষ্য ধাপে ধাপে নিজেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি জানেন, সেই পথটা এখনও অনেক দূরে। তারপরও চাচ্ছেন, একবার ওই জায়গাটায় পৌঁছাতে পারলে নিজেকে আবার প্রমাণ করতে, 'অবশ্যই আমি খেলাটা প্রচুর ভালোবাসতাম। আর এখনো বাসি। খেলা মিস করেছি শেষ তিনটা বছর। কিন্তু যে কারণে আমি বাইরে ছিলাম সেটা তো শর্টকার্টে হবে না জানতাম। শাস্তির পরে যেন আবার ফিরে আসতে পারি, যখনই ফিরে আসবো আপনাদের কাছে যেন মনে না হয় তিন বছর আমি খেলার বাইরে ছিলাম।'
 
এই চলার পথে এখন আশরাফুলের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আবার এই বিসিবির কাঠামোতে অনুশীলন করার সুযোগ পাওয়া। ট্রেনারের কাছ থেকে একটা গাইডলাইন পেয়েছেন, এখন সেটা কাজে লাগাতে চান, 'আসলে দেখলেন কি অবস্থায় আছি। আর সে তিন সপ্তাহের একটা প্রোগাম দেবে সে। সেটা আমি একা একা করার চেষ্টা করবো। কেউ আমাকে সাহায্য করলে তো করলো। তিন সপ্তাহ পর আমি আবার একটা টেস্ট দিবো। দেখা যাবে আমি কতোদূর উন্নতি করেছি।'
 
ইত্তেফাক/আরএ
Recent Posts Widget