বুলবুলের ভরসা তারা পাঁচজন

টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর তিনবার নিউজিল্যান্ড সফর করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ২০০১, ২০০৭-০৮ ও ২০১০ সালে তিন ফরম্যাটের সব ম্যাচই হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে এবার ছয় বছর পর নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের সঙ্গী গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাওয়া ধারাবাহিক সাফল্যের আত্মবিশ্বাস।
 
ক্রিকেট দুনিয়ার প্রায় সব দেশই সংগ্রাম করে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে। টেস্ট, টি-টোয়েন্টিতে কঠিন হলেও ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা দেখছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও আইসিসির কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ওয়ানডেতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাফল্য, ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতাই বুলবুলকে আশাবাদী করছে।
 
বর্তমান দলে চারজন ক্রিকেটার আছেন যারা দেড়শোর বেশি ওয়ানডে খেলেছেন। তারা হলেন; মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। একশোর বেশি ওয়ানডে খেলেছেন আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই পাঁচ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ও মুস্তাফিজুর রহমানের মতো প্রতিভাবান তরুণদের কারণেই এই সফরে বাংলাদেশের ভালো সুযোগ দেখছেন বুলবুল।
 
ওয়ানডে সিরিজ দিয়েই শুরু হবে মাশরাফিদের নিউজিল্যান্ড সফর। সেখানে দুই-একটা ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান বুলবুল। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই জেতার আশা রয়েছে। গত বিশ্বকাপে আমরা কিন্তু ওদের হোমে প্রায় হারিয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের ওয়ানডে দলটা খুবই জমাট। মুস্তাফিজ যদি ফিট হয়ে যায় এবং আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালো ফর্মে আছে।’
 
বুলবুল আরো বলেন, ‘আমাদের আরেকটা সুবিধা রয়েছে, তা হলো অন্য দলগুলো পাঁচটা ব্যাটসম্যান, একটা অলরাউন্ডার ও চারটা বোলার নিয়ে খেলে। আর আমাদের সুবিধা হলো সাতজন ব্যাটিং করতে পারে। এই অতিরিক্ত দুইজন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে প্রতিপক্ষরা পরিকল্পনা করতে পারে না। সেই জায়গাটায় আমাদের একটা বড় সুযোগ থাকবে।’
 
মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের উপরই বেশি ভরসা করছেন বুলবুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছেন, যারা একশ থেকে দেড়শ ওয়ানডে খেলেছেন এবং ৫০-৬০টি টেস্ট ম্যাচও খেলেছেন। তাদের সেই অভিজ্ঞতা আছে। গত দেড় বছরে আমরা যে ক্রিকেট খেলেছি, সেই আত্মবিশ্বাসটা তাদের মাঝে আছে।’
 
কন্ডিশনের কারণে গোটা সফরটাই চ্যালেঞ্জিং হবে বাংলাদেশের জন্য। তবে টেস্ট সিরিজটা পরে বলে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি খেলে ক্রিকেটাররা কন্ডিশনে অভ্যস্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। বুলবুল বলেন, ‘আমরা সিরিজটা শুরু করছি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে আমাদের একটা ভালো প্রস্তুতি হয়ে যাবে।’
 
২০০১ সালে বাংলাদেশ দলের হয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন বুলবুল। তাছাড়াও আইসিসির এই কর্মকর্তার পরিপূর্ণ ধারণা আছে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন সম্পর্কে। চলমান সফরে পাঁচটি ভেন্যুতে খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডে ক্রাইস্টচার্চে, পরের দুটি ওয়ানডে নেলসনে। প্রথম টি-টোয়েন্টি হবে নেপিয়ারে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে মাউন্ট ম্যাঙ্গানুইতে। প্রথম টেস্ট ওয়েলিংটনে ও ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে শেষ হবে নিউজিল্যান্ড সফর।
 
কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বুলবুল বলেন, ‘ওয়েলিংটনের আরেকটা নাম আছে ‘উইন্ডি সিটি’। প্রচুর বাতাস থাকে। আমরা ওখানে একটা টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম। তবে ওয়েলিংটন বলুন আর যাই, কেবল নেপিয়ার বাদে— সব জায়গায় বল অনেক মুভ করে।’
 
নিউজিল্যান্ডের উইকেটগুলো সম্পর্কে বুলবুলের মূল্যায়নটা এমন, ‘ওখানকার উইকেটের যে চরিত্র, তাতে সব সফল দলই ব্যর্থ হয়ে আসে। এর কারণ হলো ওদের উইকেটগুলো অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সম্মিলিত একটা উইকেট দেয়া হয়। ইংল্যান্ডের উইকেটে ঘাস থাকে এবং সুইং করে। আর অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে বাউন্স করে। নিউজিল্যান্ডে সুইয়ের সঙ্গে বাউন্সও থাকে। আর আবহাওয়া যদি খারাপ থাকে, তাহলে তো কোনো কথাই নেই।’
 
ইত্তেফাক

No comments:

Post a Comment

Recent Posts Widget