রোলবল বিশ্বকাপে ভিন্ন ভুবনের বাসিন্দারা!

রোলবলের জন্মটা দক্ষিণ এশিয়ার ভারতে। তাই ইউরোপে তেমন বিকশিত হয়নি এ ডিসিপ্লিনটি। যদিও আইস হকিতে বেশ পারদর্শী তারা। তবে স্কেটিংয়ের সঙ্গে বেশ মিল বলেই এবার চতুর্থ রোলবল বিশ্বকাপে খেলতে এসেছে তারা। আইস হকিতে খেলা অনেক দেশের ক্রীড়াবিদই এসেছেন এবারের বিশ্বকাপে। এমনকি ফুটবল পরাশক্তি দেশগুলোর খেলোয়াড়রাও এসেছেন এই ক্রীড়াযজ্ঞে।
স্কেটিং, হ্যান্ডবল ও বাস্কেটবলের মিলিত নাম রোলবল। খুব বেশি দেশে বিকশিত না হলেও বিশ্বকাপ রোলবলে অংশগ্রহণ নেহায়েত কম নয়। ২০১৫ সালে ভারতের পুনেতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বিশ্বকাপ রোলবল আসরে ২২টি দেশ অংশ নিয়েছিল। যেখানে তৃতীয় হয়েছিল লাটভিয়া। রোলবলের প্রচলন এই দেশটিতে সেভাবে না হলেও এবারের আসরে পুরুষ ও মহিলা দু’বিভাগে অংশ নিচ্ছে আইস হকিতে বিখ্যাত দেশটি।
এই দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই এসেছে আইস হকি থেকে। স্কেটিং পরে আইস হকি খেলতে হয় বলেই রোল বলের সঙ্গে সখ্য হয়েছে এসব খেলোয়াড়ের। লাটভিয়ার পুরুষ দলের অধিনায়ক ভিয়েস্টারস কিমেরমানিসের মুখেই শুনুন, ‘আমাদের দেশেও এই খেলাটির একেবারে প্রচলন নেই। আমরা সবাই আইস হকি খেলোয়াড়। আইস হকি স্কেটিং পরে খেলতে হয় বলে তৃতীয় রোলবল বিশ্বকাপে ভারত আমাদের আমন্ত্রণ জানায়। তখন থেকেই আসলে আমরা এই খেলা শুরু করি।’ গত আসরে তৃতীয় হলেও এ আসরে শিরোপার প্রত্যাশা করছে লাটভিয়া পুরুষ দল। 
তবে এ জন্য ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চান কিমেরমানিস। একই দশা স্লোভানিয়ারও। টুর্নামেন্টে একমাত্র দেশ, যাদের কেবল মহিলা দলই অংশ নিচ্ছে এবারের আসরে। বেশ কষ্ট করেই এখানে এসেছে তারা। সাতজনের আসার কথা থাকলেও টিকিট না পাওয়ায় দু’জন ঢাকায় আসতে পারেনি। তাই পাঁচজন নিয়ে এখন তারা মাঠে নামতে পারবে কিনা তা নিয়েই চলছে সংকট। লাটভিয়ার মহিলা খেলোয়াড় গেবর ভেসনা উপভোগ করছেন বাংলাদেশের পরিবেশ। তার কথায়, ‘বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়ের সঙ্গে দারুণ সময় কাটছে আমাদের।’ এদিকে অনেকটাই আনকোরা মনে হয়েছে হংকং পুরুষ দলকে। যাদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ১৯-১ গোলে হারিয়েছে। দলে ১২ জন আসার কথা থাকলেও মাত্র ছয়জন এসেছেন হংকং পুরুষ দলে। ফলে তাদের কোনো রিজার্ভ খেলোয়াড় নেই। চুক মেন সুয়েন, মেন চুং হেউং, সাইরাস চ্যান, হে ইয়ং এবং চং কা পিউ নিয়েই হংকংয়ের পুরুষ দল। শুধু আইস হকি নয়, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড এবং উরুগুয়ের মতো ফুটবল পরাশক্তি দেশগুলোর স্কেটাররাও অংশ নিচ্ছেন এবারের বিশ্বকাপে। তবে ফুটবল মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও রোলবল বিশ্বকাপে পাশাপাশিই বসা ছিলেন এই তিন দেশের খেলোয়াড়রা। শুক্রবার উদ্বোধনী দিনে বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে হয়ে গেলেন একাকার। যে কোনো ক্রীড়ায় উরুগুয়ের প্রথম আসা বাংলাদেশে। এই দলের সদস্য দামিয়ান ইগলেসেলিয়াসের কথায়, ‘উরুগুয়ের সবাই খেলা পাগল। আমরা সুদূর উরুগুয়ে থেকে উড়ে এসেছি রোলবলকে পরিচিত করার জন্য। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে আর যেটি আমাকে সবচেয়ে বেশি আলোড়িত করে সেটি হল যেখানেই যাই সেখানেই দেখি লুইস সুয়ারেজের ভক্ত।’

No comments:

Post a Comment

Recent Posts Widget