শুক্রবারের বেসিন রিজার্ভ যেন একটুকরো বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল। আহা,
নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ। দিনটাই ছিল সুন্দর। সেটা আরও মনোহর হয়ে ওঠে সাকিব
আল হাসানের ডাবল সেঞ্চুরি (২১৭) এবং মুশফিকুর রহিমের (১৫৯) শতকে। ৩৫৯ রানের
পার্টনারশিপে। খেলা দেখতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশীদের হৃদয় লাল-সবুজে রাঙিয়ে
দেন সাকিব-মুশফিক। ওয়েলিংটনের বেয়াড়া হাওয়ার দুষ্টুমিও দমাতে পারেনি
বাংলাদেশের এমন দুর্দমনীয় ব্যাটিং।
বাইশ গজে তখন মুশফিক-সাকিবের দাপুটে ব্যাটিং চলছে। আর মাঠের বাইরে ছোট ছোট
টিলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে শুয়ে-বসে থাকা আমুদে দর্শকরা কোনো কার্পণ্য করেননি
হাততালি দিতে। সেটা মুশফিকের ছক্কা হোক কিংবা ওয়াগনারের উইকেট। আর যারা
দূরদেশে বসে সাকিব-মুশফিকের হৃদয়গ্রাহী ব্যাটিংয়ে মোহিত-মুগ্ধ, তারা
কিছুক্ষণের জন্যে হলেও ভুলে যান লাল-সবুজের স্পর্শ থেকে দূরে থাকার কষ্ট।
কী দারুণ ব্যাটিংই না করলেন মুশফিক-সাকিব। ভেঙে খানখান হয়ে গেল
নিউজিল্যান্ডের বোলিং। ক্যানভাসে আঁকা অনিন্দ্যসুন্দর ছবির মতো তাদের কষ্ট
পুল, হুক এবং স্লিপের ফাঁক গলিয়ে বের করে দেয়া বল- যা, দড়িতে গিয়ে চুমু খা।
হ্যাঁ, ক্যাচ পড়েছে। সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে রানআউটের। এ নিয়ে আক্ষেপে
পুড়েছেন কিউই বোলার, ফিল্ডাররা। এসবই খেলার অংশ। মেনে নিতে হয়। অভিবাদন
জানাতে হয় সুন্দর ব্যাটিংয়ের। সবুজে মাখামাখি আউটফিল্ড পেরিয়ে কোনো
ডেলিভারি যখন দড়ির ওপারে গিয়ে আছড়ে পড়েছে, মনে হয়েছে যেন শপাং করে চাবুক
আঘাত হেনেছে ব্ল্যাকক্যাপদের অহংকারে। তাদের ক্রিকেট-আভিজাত্যে।
আর প্রবাসী বাংলাদেশীদের হাসি ক্রমশ চওড়া হয়েছে। যতবার তাদের চোখ গেছে
স্কোর বোর্ডে হাসি রূপ নিয়েছে অট্টহাসিতে। টাইগার ভক্তদের বলতে শোনা গেছে,
‘একটু স্কোর বোর্ডের দিকে তাকাও।